স্বামীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবীতে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

 

মেহেদী হাসান আকন্দ: ইসলামিক ফাউন্ডেশন মিঠামইন উপজেলার সুপারভাইজার মো. নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার নি:শর্ত মুক্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন স্ত্রী তৌহিদা বেগম। শনিবার (১ ফেব্রুয়ারী) দুপুরে দুর্গাপুর পৌর এলাকার নিজ বাড়িতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, মো: নজরুল ইসলাম দুর্গাপুর উপজেলার বালিচান্দা গ্রামের মৃত আলাউদ্দিন আল আজাদের পুত্র। তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলার সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত। ইতোপূর্বে তিনি নেত্রকোণার দুর্গাপুর উপজেলার সুপারভাইজার হিসাবে কর্মরত ছিলেন। ২০২৪ সালের ২ সেপ্টেম্বর বদলীর আদেশ হওয়ায় ৯ সেপ্টেম্বর তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইন উপজেলায় যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি নিয়মিত ভাবে মিঠামইন বসবাস করে অফিস করছেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন নেত্রকোণা কার্যালয়ের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া উপপরিচালক শফিকুর রহমান সরকারের স্ত্রী মরিয়ম আক্তার বাদী হয়ে গত ২১ জানুয়ারী আমার স্বামী নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।

মামলায় তিনি উল্লেখ করেন বাদী মরিয়ম আক্তারের স্বামী ১ নাম্বার সাক্ষী শফিকুর রহমান সরকারের মোবাইলে ধারণকৃত তাহাদের ঘনিষ্ঠ ছবি ও অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ভিডিও (পর্নোগ্রাফি) ১ নাম্বার সাক্ষীর মোবাইল হ্যাক করে নজরুল ইসলাম তাহার মোবাইল ফোন বা নিয়ন্ত্রণাধীন ইলেকট্রনিকস ডিভাইসে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাহাদের তৈরিকৃত উক্ত পর্নোগ্রাফি ভিডিও ক্লিপ ব্যবহার করে ২০ লক্ষ টাকা দাবী করেন। উক্ত মিথ্যা মামলায় নজরুল ইসলামকে ২৯ জানুয়ারী ইসলামিক ফাউন্ডেশন কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয় হতে গ্রেফতার করেন নেত্রকোণা মডেল থানা পুলিশ।

সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদা বেগম সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, মামলার বাদী মরিয়ম আক্তারের স্বামী শফিকুর রহমান সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশন নেত্রকোণা জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক থাকা অবস্থায় তাহার দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর হতে শফিকুর রহমান সরকার আমার স্বামীর বিরুদ্ধে বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। প্রকাশিত উক্ত সংবাদের বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রতিবেদন দাখিলের জন্য ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালক হাবেজ আহমেদকে কর্মকর্তা নিয়োগ করেন। তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৫ জানুয়ারি সরেজমিনে তদন্ত করে শফিকুর রহমান সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ সাপেক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন।

২২ জানুয়ারী ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আ: ছালাম খান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশে শফিকুর রহমান সরকারকে সাময়িক বরখাস্ত করে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কার্যালয়ে সংযুক্ত করেন এবং তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেন। শফিকুর রহমান সরকার সাময়িক বরখাস্ত হওয়ায় নিজের অপরাধ ঢাকতে নিজেদের তৈরিকৃত পর্নোগ্রাফির নাটক সাজিয়ে নিরীহ নজরুল ইসলামকে আসামী করে গ্রেফতার করিয়েছেন।

তৌহিদা বেগম বলেন, শফিকুর রহমান সরকারের মোবাইলে তাহাদের তৈরিকৃত পর্নোগ্রাফি রয়েছে নজরুল ইসলাম কি করে জানবে? তাছাড়া বদলীর পর থেকেই নজরুল ইসলাম কিশোরগঞ্জ জেলার মিঠামইনে বসবাস করেন। সংবাদ সম্মেলনে তৌহিদা বেগমের প্রতিবন্ধী মেয়ে নুসরাত জাহান আফিয়া এবং শিশু পুত্র আরিফ আল আজাদ উপস্থিত ছিলেন। নজরুল ইসলামের নামে মিথ্যা মামলা দ্রুত প্রত্যাহার ও নি:শর্ত মুক্তি দাবী করেন।

লিখিত বক্তব্যে তৌহিদা বেগম ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে শফিকুর রহমান সরকার ও তার স্ত্রী মরিয়ম আক্তার পর্নোগ্রাফি তৈরি করে নিজ মোবাইলে সংরক্ষণ করে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ভাবমূর্তি নষ্ট করায় তাহাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানান।

Previous Post Next Post

نموذج الاتصال